কুদামা ইবনে মাজউন
কুদামা ইবনে মাজউন | |
---|---|
মুহাম্মাদের সাহাবা | |
জন্ম | ৫৮৮ খ্রিস্টাব্দ জুমাহ শাখা, কুরাইশ গোত্র, মক্কা |
মৃত্যু | ৩৬ হিজরি, ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ মদিনা |
যার দ্বারা প্রভাবিত | মুহাম্মাদ, আবু বকর |
গভর্নর, বাহরাইন | |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
দাম্পত্য সঙ্গী | হিন্দা বিনতে ওয়ালি |
পিতামাতা |
|
উল্লেখযোগ্য কাজ | বদরের যুদ্ধ উহুদের যুদ্ধ, খন্দকের যুদ্ধ অংশগ্রহণ |
আত্মীয় |
|
কুদামা ইবনে মাজউন (মৃত্য-৩৬ হিজরি) মুহাম্মাদের একজন সাহচার্য ও বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবা ছিলেন। তিনি বাহরাইনের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশিষ্ট সাহাবা উসমান ইবনে মাজউন তার ভাই ছিলেন।
নাম ও বংশ পরিচয়য়
[সম্পাদনা]কুদামা ইবনে মাজউন এর ডাক নাম ছিল কুদামাহ,আবু উমার। তার পিতার নাম মাজউন ইবন হাবীব এবং মায়ের নাম সুখাইলা বিনতুল আনবাস।[১] ।তিনি কুরাইশ বংশের বনী জুমাহ শাখার সন্তান। উমারের বোন সাফিয়্যা বিনতুল খাত্তাব তার স্ত্রী।
ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত
[সম্পাদনা]কুদামাহ ইসলামের সূচনা লগ্নেই ইসলাম গ্রহণ করেন। আবু বকর সিদ্দীকের আহবানে যে সকল ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেন কুদামা ইবনে মাজউন তার ভাইদ্বয় উসমান ইবন মাজউন ও আবদুল্লাহ ইবনে মাজউন অন্যতম। কুদামা দুইবার হিজরত করেন। প্রথমবার দুই ভায়ের সাথে প্রথমে হাবশায় হিজরত করেন। অতঃপর মক্কাবাসীরা সকলে ইসলামের দীক্ষা নিয়েছে এমন একটি মিথ্যা গুজব শুনে অনেকে হাবশা থেকে মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেন। এই প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে কুদামাহও ছিলেন।[২]
কুদামাহ হাবশা থেকে ফিরে মক্কায় বসবাস করতে থাকেন। বদর যুদ্ধের পূর্বে দ্বিতীয়বার আবার মদীনায় হিজরত করেন এবং বদরে যোগদান করার সৌভাগ্য অর্জন করেন। তারপর উহুদ, খন্দক সহ সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
মদ পানে অভিযুক্ত
[সম্পাদনা]খলিফা উমার কুদামাহকে বাহরাইনের শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। এই দায়িত্বে নিয়োজিত থাকাকালেই তিনি মদ পানের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং তার ওপর মদ পানের নির্ধারিত শাস্তি জারি করা হয়। ঘটনার বর্ণনায় জানা যায়, একবার বনু আবদি কায়সের সরদার জারুদ নামে এক ব্যক্তি খলীফা উমারের নিকট উপস্থিত হয়ে কুদামাহর বিরুদ্ধে মদ পানের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু কুদামাহ এই মদ পানের বিষয় অস্বীকার করেন । জারুদ তার বিচারের ব্যপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে । উমরকে বার বার তাগিদ দিতে শুরু করেন এবং বিশিষ্ট সাহাবা আবু হুরাইরাকে কে সাক্ষ্য হিসাবে উপস্থাপন করেন। আবু হুরাইরা বললেন,আমি তাকে মদ পান করতে দেখেননি, তবে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বমি করতে দেখেছি ।উমর সাক্ষ্য দুর্বল মনে করলেন । জারুদ কুদামার স্ত্রী হিন্দা বিনতু ওয়ালীকে সাক্ষ্য হিসাবে পেশ করলে সেও মদ পানের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেন ।[৩]
কুদামা উমরের চাচাত ভাই ছিল ফলে অনেকে উমারের সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার প্রশ্ন তুলল ।উমর সাহাবীদের সাথে দুই দফা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলেন মদ পানের শাস্তি কুদামা ইবনে মাজউনকে প্রদান করা হবে।[৪] এতে করে উমর এর সাথে কুদামার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় । পরে উমর পুনরায় আবার সম্পর্ক ফিরিয়ে আনেন।
বর্ণিত আছে, রাসূলে কারীমের ওফাতের পর একমাত্র কুদামাহ ছাড়া আর কোন বদরী সাহাবী মদ পানের অভিযোগে সাজা প্রাপ্ত হননি।[৫] |
---|
মৃত্যু
[সম্পাদনা]কুদামাহর মৃত্যুসন সম্পর্কে মতপার্থক্য আছে। প্রসিদ্ধমতে তিনি আলীর খিলাফতকালে ৩৬ হিজরিতে মৃত্যুবরণ করেন । মৃতুকালে তার বয়স ছিল ৬৮ বছর। অন্য একটি মতে তার মৃত্যুসন ৫৬ হিজরী।